কোটা সংস্কার চেয়ে মিছিল, কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিপেটা

কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের বিক্ষোভ। শাহবাগ, ঢাকা, ১৪ মার্চ। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের বিক্ষোভ। শাহবাগ, ঢাকা, ১৪ মার্চ। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করেছে। আজ বুধবার পাঁচ দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভকারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিতে গেলে হাইকোর্ট মোড়ে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে অনেকে আহত হন।

বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছেন, এ ঘটনায় কমপক্ষে ১৬ জন বিক্ষোভকারী আহত হন। পাঁচজনকে পুলিশ আটক করেছে। তাঁদের এক ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে না দিলে বিকেলে তাঁরা আবার বিক্ষোভ করবেন বলে জানান। হামলার প্রতিবাদে আগামী রোববার সন্ধ্যা সাতটায় মোমবাতি প্রজ্বালন করা হবে বলে জানান তাঁরা।

আজ সকাল ১০টার দিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা গ্রন্থাগারের ভেতরে থাকা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ এতে বাদ সাধে। গ্রন্থাগারের দরজা বন্ধ করতে চাইলে আন্দোলনকারীরা বাধা দেন। তাঁরা গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বাধা না দেওয়ার অনুরোধ করেন।

পরে কয়েক হাজার আন্দোলনকারী শাহবাগে ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে মিছিল বের করেন। এ সময় তাঁরা কোটা সংস্কারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

আন্দোলনকারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়।একপর্যায়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে। হাইকোর্ট মোড় এলাকা, ঢাকা, ১৪ মার্চ। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
আন্দোলনকারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়।একপর্যায়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে। হাইকোর্ট মোড় এলাকা, ঢাকা, ১৪ মার্চ। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

তাদের পাঁচ দফা দাবি হলো কোটাব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নিয়ে আসা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা থেকে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ পরীক্ষা না নেওয়া, সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা এবং চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন প্লাকার্ডে ও স্লোগানে তাঁদের দাবি তুলে ধরেন। প্লাকার্ডগুলোয় লেখা ছিল, ‘নাতিপুঁতি কোটা বাতিল চাই, কোটাপদ্ধতি বাতিল চাই’, ‘ইহা কোটা নয়, বৈষম্য’, ‘১০ %-এর বেশি কোটা নয়’। এর আগে কোটা সংস্কারের দাবিতে আরও তিন দফা কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

আজ বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে দিয়ে বাংলা একাডেমি ও দোয়েল চত্বর দিয়ে হাইকোর্ট মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা সচিবালয়ের সামনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। আন্দোলনকারীরা সেখানে অবস্থান নিতে চাইলে পুলিশ তাতেও বাধা দেয়। একপর্যায়ে মারমুখী হয় পুলিশ। কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিপেটা করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। তাঁরা দাবি করেন, পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই হামলা করেছে।